তরমুজ খাবার পদ্ধতি ও উপকারিতা
পরিচিতিঃ তরমুজ
গরমের অত্যন্ত জনপ্রিয় ফলগুলির একটি হচ্ছে তরমুজ। তরমুজ কেবল সুস্বাদুই নয় এটি খাবার রয়েছে অনেক উপকারিতা। তরমুজ ইংরেজিতে Water Melon নামে পরিচিত। তরমুজের বৈজ্ঞানিক নাম Citrullus lanatus. রসালো ও সুস্বাদু এই ফল নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল।
তাই তরমুজ খাবার পদ্ধতি ও উপকারিতা জানতে আমাদের পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে চলে যাই মূল আলোচনায়।
তরমুজ খাবার পদ্ধতি
তরমুজ অনেক ভাবেই খাওয়া যায়, তবে আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে তরমুজ কেটে
খাওয়া। এছাড়া তরমুজের জুস বা শরবত বেশ জনপ্রিয় একটি পানীয়। আবার তরমুজ আর শসা বা অন্যান্য
ফলমূল একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে স্মুদি বানিয়ে খাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ
শসা খাবার নিয়ম ও উপকারিতা
আবার তরমুজের রস জমিয়ে আইস্ক্রিম বানিয়েও খাওয়া যায়। আরেকটি অপ্রচলিত কিন্তু
উপকারি খাবার হচ্ছে তরমুজের বীজ বা বিচি। তরমুজের বীজ শুকিয়ে, ভেজে বা গুড়ো করে
খাওয়া যায়। তবে তরমুজের বিচি অংকুরিত করে তারপর খাওয়া উত্তম।
আরও পড়ুনঃ
লবঙ্গ । ব্যাবহার ও উপকারিতা
তবে খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতে তরমুজ না খাওয়াই উত্তম। কারন তরমুজে প্রচুর
পানি থাকায় তা প্রস্রাবের চাপ তৈরী করে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এছাড়া পেটে
গ্যাসের সমস্যা তৈরী করতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় দিনের বেলা অল্প অল্প করে বার
বার তরমুজ খাওয়া, বিশেষ করে সকালের নাস্তায় তরমুজ খাওয়া। আর তরমুজ খাওয়ার ৩০
মিনিটের মধ্যে পানি না খাওয়া, এতে হজমের সমস্যা হতে পারে।
তরমুজের উপকারিতা
তরমুজের রয়েছে বিবিধ উপকারিতা। তরমুজের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
উপাদান। একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তরমুজের। এগুলো নিচে আলচনা করা
হলোঃ
১. শরীরের পানির চাহিদা মেটাতেঃ তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশই পানি। শরীরের
পানির চাহিদা মেটাতে এবং শরীরকে ডিহাইড্রেশন/পানিশূন্যতা থেকে বাচাতে তরমুজের বিকল্প নেই।
২. গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ গর্ভবতী নারীদের তরমুজ খাবার
পরামর্শ দেন ডাক্তারেরা। কারন এতে থাকা প্রচুর পরিমানে পানি এবং খনিজ উপাদান
গর্ভবতী নারীদের পা-ফোলা সহ অন্যান্য সমস্যায় ভীষণ উপকারি।
৩.টাইফয়েড রোগিদের জন্যঃ টাইফয়েড
রোগীদের জন্য দৈনিক আধাপাকা
তরমুজের
রস
২
চা
চামচ করে খেলে উপকার
পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃ
লাল শাকের উপকারিতা
৪.স্নায়ুর জন্য উপকারিঃ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন -বি।
স্নায়ুর স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য ভিটামিন -বি অত্যন্ত জরুরী।
৫.ক্যান্সার প্রতিরোধে তরমুজঃ তরমুজে আছে লাইকোপেন
ও
কিউকারবিটাসিন-ই
নামক উপাদান
, যার ক্যান্সাররোধী ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও এ নিয়ে আরো
বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
৬. রক্তচাপ কমায় তরমুজঃ বিভিন্ন গবেষণায়
দেখা
যায়,
তরমুজে থাকা লাইকোপেন এবং পটাসিয়াম রক্তে কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও
রক্তচাপ
কমাতে
সহায়তা
করতে
পারে।
আরও পড়ুনঃ
মাশরুম । খাবার নিয়ম ও উপকারিতা
৭.পেশির ব্যাথা উপশমেঃ তরমুজে থাকা সিট্রুলিন নামক এমাইনো এসিড, ব্যায়ামজনিত পেশির ব্যাথা উপশমে কার্যকরি বলে ধারনা করা হয়।
৮.ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ তরমুজের ভিটামিন- এ এবং সি ত্বকের স্বাস্থ্য
রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৯.চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: ভিটামিন- এ চোখের জন্য কতটা উপকারি তা আমরা
সবাই জানি। আর তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন- এ, ক্যারোটিনয়েড এবং লাইকোপেন। তাই চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় নিয়মিত
তরমুজ খাওয়া উচিৎ।
১০. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পানি এবং কিছু
মাত্রায় ফাইবার। যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অতি জরুরি।
আরও পড়ুনঃ
আদা । ব্যাবহার ও উপকারিতা
১১.প্রদাহ রোধেঃ তরমুজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, লাইকোপেন ও ভিটামিন-সি প্রদাহ কমাতে সহায়তা করতে পারে এবং এর ফলে হওয়া অনেক রোগ উপশম করে।
১২.ওজন কমাতে সহায়তা করেঃ তরমুজে প্রচুর পানি থাকে, সাথে অল্প পরিমানে
ক্যালরি। ফলে এটি খেলে পেট ভরা থাকে কিন্তু ওজন খুব একটা বাড়ে না। তাই যারা ওজন
কমাতে চান তাদের জন্য তরমুজ একটি আদর্শ খাবার।
১৩. ত্বকে ব্রণ হওয়া রোধ করেঃ তরমুজের
রয়েছে
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল
উপাদান।
যা
ত্বকের ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী
ব্যাকটেরিয়াকে
ধ্বংস
করতে
সাহায্য
করে।
পরিণামে
ব্রণ
তৈরি
হওয়ার
প্রবনতা
কমে
যায়।
শেষ কথাঃ তরমুজ খাবার পদ্ধতি ও উপকারিতা
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ছিলো তরমুজ খাবার পদ্ধতি ও উপকারিতা নিয়ে।আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে শেয়ার করুন আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসলে আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক হবে।আপনাদের মূল্যবান মতামত জানান কমেন্ট সেকশনে। আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url