পুঁই শাকের উপকারিতা
পরিচিতিঃ পুঁই শাক
বাজারে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় শাকগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুঁই শাক। স্বল্প মূল্যের এই শাক অত্যন্ত উপকারি। একে ইংরেজীতে একে Malabar Spinach, Vine Spinach বা Basella Spinach বলা হয়ে থাকে। পুঁই শাকের বৈজ্ঞানিক নাম Basella alba. এটি একধরনের লতা জাতীয় শাক।
পুঁই শাকের উপকারিতা
কথায় আছে—"শাকের মধ্যে পুঁই, মাছের মধ্যে রুই"। দেশের অন্যতম জনপ্রিয়, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর শাকের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুঁই শাক। তবে শুধু স্বাদের দিক থেকেই নয় উপকারিতার দিক থেকেও অন্যতম হচ্ছে পুঁই শাক। নিম্নে এর উপকারিতা সমূহ আলোচনা করা হলোঃ
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ পুঁই শাকে থাকা প্রচুর পরিমানে পানি এবং ফাইবার, অন্ত্রের পরিচালন স্বাভাবিক রাখে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ পুঁই শাকে এক ধরণের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে, যার নাম লিপোইক এসিড। দেখা গেছে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. ক্যান্সার নিয়ন্ত্রন করেঃ পুঁই শাক কিন্তু ক্যানসার দূর করতে বেশ উপকারি। অন্য সব সবুজ শাক-সবজির মতো পুঁই শাকেও রয়েছে ক্লোরোফিল। গবেষণায় দেখে গিয়েছে, এই ক্লোরোফিল কিন্তু কার্সিনোজেনিক প্রভাব আটকাতে খুব ভালো কাজ দেয়। আর আমরা সবাই জানি যে কার্সিনোজেনিকের কারনেই ক্যানসার হয়। আর এতে থাকা ফাইবার, পাকস্থলী আর কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
আরও পড়ুনঃ আলুবোখারা । ব্যাবহার ও উপকারিতা
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ পুঁই শাক পটাসিয়ামের খুব ভালো একটি উৎস। পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে। আমরা জানি সোডিয়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।
৫. এজমা বা হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করেঃ পুঁই শাকে থাকা বিটা-ক্যারোটিন, এজমা বা হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে এজমা বা হাঁপানি রোগিদের জন্য এটি বেশ উপকারি।
৬.চোখের সুরক্ষায় পুঁই শাকঃ পুঁই শাক কিন্তু চোখ ভালো রাখতেও বেশ উপকারি। পুঁই শাকে আছে ভিটামিন-এ, বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন জাতীয় উপাদান যা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে খুবই দরকারী। লুটেইন থাকে ম্যাকুলায়, যেটি রেটিনার একটি অংশ আর এটি অতিরিক্ত আলোর প্রভাব থেকে চোখকে ভালো রাখে। মেক্যুলার ডিজেনারেশনের থেকেও চোখকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুনঃ লাল শাকের উপকারিতা
৭. শরীরে এনার্জি বাড়াতে সহায়তা করেঃ পুঁইশাক শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। পুঁইশাকে আছে ম্যাগনেসিয়াম। এটি শরীরের এনার্জি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও পুঁইশাকে ফলেট পাওয়া যায়। এটি এনার্জির খুব ভালো একটি উৎস। এটি খাবারকে এনার্জিতে রূপান্তরিত করে।
৮. হাড়ের গঠন উন্নত করতেঃ পুঁই শাকে রয়েছে ভিটামিন-কে, যা হাড় গঠনে সাহায্য করে। ভিটামিন-কে হাড়ের গাঠনিক প্রোটিন উন্নত করে এবং ক্যালসিয়াম ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের মাত্রাও কম করে। তাই হাড়ের শক্তি বাড়াতে নিয়মিত পুঁই শাক খাওয়া উচিৎ।
৯.ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ পুঁই শাকে রয়েছে ভিটামিন-এ, যা আমাদের ত্বকের আর স্ক্যাল্পের/মাথার ত্বকে তেল নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ময়েশ্চার ধরে রাখে। ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হলে ব্রণ হয়। পুঁই শাক এর পরিমান কমিয়া ব্রণ হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুনঃ শসা খাবার নিয়ম ও উপকারিতা
১০. গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারিঃ পুঁইশাকে রয়েছে জিংক, ফলিক এসিড, ফলেট, ভিটামিন-এ জাতীয় উপাদান। এই উপাদানগুলো গর্ভবতী নারী, গর্ভস্থ ভ্রূণ এবং দুগ্ধবতি নারীদের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
পুঁই শাক গ্রহণে সাবধানতা
উপসংহার ঃ পুঁই শাকের উপকারিতা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url