গাজর । খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

পরিচিতিঃ গাজর

সবজির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি সবজি হচ্ছে গাজর। গাজর এক ধরনের রূপান্তরিত মূল তারপরও  গাজরকে সবজি হিসেবে ধরা হয়। গাজরকে ইংরেজীতে Carrot বলা হয়। গাজরের বৈজ্ঞানিক নাম Daucus carota. আমাদের আজকের পোস্টের আলোচ্য বিষয়  গাজর  খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিয়ে।

আজকের পোস্টটি পড়লে জানতে পারবেন গাজর  খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিয়ে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে চলে যাওয়া যাক মূল পোস্টে।

গাজর  খাওয়ার নিয়ম

গাজর অনেকভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা, রান্না করে, সালাদ হিসেবে। তবে সব ভাবেই খেলে কিছু না কিছু উপকার পাওয়া যায়। গাজর কাঁচা খেলে অবশ্যই কাটার আগে ভালো করে পরিস্কার পানিতে  ধুয়ে নিয়ে খেতে হবে। গাজর কাটার পরে ধুলে এর পুষ্টিগুন বিনষ্ট হয়। 

আরও পড়ুনঃ শসা খাবার নিয়ম ও উপকারিতা

আবার রান্না করে খাবার ক্ষেত্রে গাজর  খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে অল্প আঁচে রান্না করে খাওয়া। অধিক তাপে বা দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করে খেলেও গাজরের পুষ্টিগুন বিনষ্ট হয়। তাই গাজর রান্না করলে তা অল্প তাপে এবং অল্প সময় রান্না করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ আদার  ব্যাবহার ও উপকারিতা

এছাড়াও গাজর অন্যান্য সবজির সাথে সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। তাতে উপকার আরও বেশি পাওয়া যাবে। এছাড়া গাজর ভর্তা করেও খাওয়া যেতে পারে। গাজরের হালুয়াও অনেক সুস্বাদু এবং উপকারি। 

গাজর  খাওয়ার উপকারিতা

গাজর খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ-

১. এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেঃ গাজরে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারটিন যা এক ধরনের এন্টি-অক্সিডেন্ট। এটি বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে চামড়া ঝুলে পড়া এবং বলিরেখা হওয়া কমায়।

২. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়ঃ গাজরের উপকারিতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, আর ভিটামিন-এ, দৃষ্টিশক্তির জন্য যে কতটা প্রয়োজন তা বলাই বাহুল্য।

৩. ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ গাজরে থাকা এন্টি-অক্সিডেন্টসমুহ শরীরে থাকা  ফ্রি-র‍্যাডিক্যালস সরিয়ে শরীরকে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে বাচায় ।

৪.ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্যঃ গাজর ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারি। এতে থাকা ভিটামিন এবং অন্যান্য খনিজ ত্বকের উজ্জ্বলতা ব্যাপক বৃদ্ধি করে।

৫.হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ গাজরে বিদ্যমান বিটা-ক্যারোটিনয়েড সমূহ হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভীষণ উপকারি। 

৬.লিভার বা যকৃতের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ গাজরে থাকা ভিটামিন এ লিভারে জমে থাকা বিভিন্ন টক্সিক উপাদানগুলোকে বের করে দিয়ে লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকারি ভূমিকা পালন করে।

 ৭. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়ঃ সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত  এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ছয়টির বেশি গাজর খান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি, যারা এর থেকে কম পরিমানে  খাচ্ছেন তাদের তুলনায় অনেক কম হয়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে  খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন গাজর। 

৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ গাজরের জুসে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন পটাসিয়াম, ফসফরাস সহ অন্যান্য উপাদানগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৯. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ গাজরে থাকা অত্যন্ত কম পরিমানের শর্করা এবং ক্যালরি রক্তের শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে। 

১০. বয়স জনিত অন্ধত্ব রোধেঃ অন্ধত্বের কারণ  রেটিনা এবং অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া দ্য ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে বয়স জনিত অন্ধত্বের ঝুঁকি কমে যায়। গাজরে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন যা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, চোখের কার্যকারিতা ঠিক রাখে এবং অন্ধত্বের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

১১. ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখাঃ গাজরে থাকা প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন-সি  ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে। তার পাশাপাশি শ্বাস-প্রশ্বাসের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস এবং এমফিসেমা প্রতিরোধ করে।

১২. পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ গাজরে থাকা প্রচুর পরিমানে ফাইবার বা খাদ্য আশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

১৩. রক্তে হিমোগ্লোবিন  এর মাত্রা বাড়াতেঃ গাজর রক্তের প্রধান উপাদান লোহিত রক্ত কণিকাকে দীর্ঘজীবী করে এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়  রক্ত বাড়াতে হলে তাই প্রতিদিন অন্তত একটি কচি গাজর খান।

উপসংহারঃ গাজর । খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

আমাদের আজকের পোস্টের আলোচ্য বিষয় ছিলো গাজর  খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা  নিয়ে। আশা করি আমাদের এই পোস্ট পড়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের এই পোস্ট যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে শেয়ার করুন আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর মতামত জানান কমেন্ট সেকশনে। এরকম আরও নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪