সস্তা,সহজলভ্য কিন্তু পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি খাদ্যের নাম কলমি শাক। কলমি
শাক একপ্রকারেরঅর্ধ-জলজউষ্ণমণ্ডলীয় উদ্ভিদ।এর পাতাশাকহিসাবেখাওয়াহয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ipomoea aquatica. ইংরেজিতে কলমি শাক Water Spinach, river spinach, water morning glory, water
convolvulus, Chinese
spinach, Swamp cabbage নামে
পরিচিত।
আমাদের দেশে কলমিশাকমূলতভাজিঅথবাঝোলরান্নাকরেভাতেরসঙ্গেখাওয়াহয়।এছাড়াএইশাকদিয়েপাকোড়া,
বড়াইত্যাদিতৈরিকরেখাওয়াযায়। আবার কলমি শাক ভর্তা করেও খাওয়া যায়।
কলমি শাকের উপকারিতা
কলমি শাক অত্যন্ত উপকারি একটি খাবার। এটি পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে
আমিষ, ক্যালসিয়াম,ফসফরাস, থায়ামিন, সোডীয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন-সি
ইত্যাদি। নিচে কলমি শাক এর উপকারিতা আলোচনা করা হলোঃ
১.লিভার বা যকৃতের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কলমি শাকে থাকা কিছু উপাদান লিভার বা যকৃতের বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে
সহায়তা করে।
২.হাড় শক্ত করেঃ কলমি শাকে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়ের গঠন উন্নত করে এবং হাড়কে শক্ত
করে।
৩.ভিটামিন-সিঃ কলমি শাকে থাকা ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধ করে এবং ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য
করে।
৪.ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ কলমি শাকে থাকা প্রচুর পরিমানে এন্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি-র্যাডিকেলস
কমিয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫.হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন। এটি ধমনিতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৬. রক্তেহিমোগ্লোবিনেরপরিমানঠিকরাখেঃকলমি শাকে আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন। আয়রন হচ্ছে হিমোগ্লোবিনের প্রধান উপাদান।
ফলে নিয়মিত কলমি শাক খেলে রক্তেহিমোগ্লোবিনেরপরিমানঠিক থাকে।
৭.মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করেঃজন্মেরপর কোনশিশু যদি মায়েরবুকেরদুধনাপায় তবে সেইমাকেকলমিশাক অথবাকলমিশাকছোটমাছদিয়েরান্নাকরেখেতে দিলে।এতেশিশুপর্যাপ্তপরিমাণেদুধপাবে।
৮. দুর্বলতা দূর করেঃকলমিশাকে প্রচুর পরিমানে খাদ্যশক্তি থাকায় তা অসুস্থতা জনিত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার
জন্য বিশেষ করে উপকারি।
৯. মাথাব্যাথা দূর করেঃ যাদের বিনা কারনে মাথাব্যাথা করে তাদের
জন্য কলমিশাক বিশেষ উপকারি।
১৫.গর্ভবতী নারী ও গর্ভস্থ শিশুর উপকারেঃকলমিশাকেপ্রচুর পরিমানেফলিকঅ্যাসিডথাকে,
যাগর্ভবতীমাওশিশুরস্বাস্থ্যর জন্য উপকারি।ফলিকঅ্যাসিডসাধারণতশিশুরমস্তিষ্কউন্নতিরজন্যপ্রয়োজন।তাইকলমিশাকগর্ভাবস্থায় ্মা ও শিশু উভয়ের জন্য অত্যন্তউপকারী।
১৬. ঋতুস্রাবের সমস্যা দুরিকরনেঃমহিলাদেরবিভিন্নশারীরবৃত্তীয়সমস্যায়দ্রুতকাজকরেকলমি শাক।ঋতুস্রাবেরসমস্যাদূর করতেকলমিশাকউপকারীভূমিকাপালনকরে।
১৭. গর্ভাবস্থার সমস্যা সমাধানেঃগর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতীমায়েদেরশরীরে,
হাতে-পায়েপানিআসে বা ফুলে যায়।সেইসময়কলমিশাকবেশিকরেরসুনদিয়েভেজেনিয়মিতখেলেপানিকমেযায়।
১৮. জ্বালা-যন্ত্রনার উপশমেঃপ্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রণা করলে কলমি শাকের রস করে ৩ বা ৪ চা-চামচ পরিমাণ ৩
সপ্তাহ খেলে ওই জ্বালা কমে যায়। আর হাত-পা বা শরীর জ্বালা করলে কলমি শাকের রসের
সঙ্গে একটু দুধ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
কলমি শাক খাবার সাবধানতা
কলমি শাক অত্যন্ত উপকারি তাতে সন্দেহ নেই তবে অন্যান্য খাবারের মতই এটি
গ্রহনেও সাবধান থাকা উচিৎ। বিশেষজ্ঞদেরমতে,
যাদেরকিডনিরসমস্যা আছে,
হজমশক্তি দুর্বল,
ইউরিকঅ্যাসিডেরসমস্যা,
গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যাআছেতাদেরকলমিশাকখাওয়াউচিতনয়।
আবার কলমি শাক সহ যে কোনও শাক-সবজিরই পুরো উপকারিতা পেতে হলে তা সঠিকভাবে
রান্না করতে হবে। অধিক তাপে বা বেশি সময় ধরে রান্না করলে এর পুষ্টিগুন নষ্ট
হয়ে যেতে পারে। আর শাক রান্না করার সময় তা অল্প তেল সহযোগে রান্না করলে উপকার
বেশি পাওয়া যায়।
শেষ কথাঃ কলমি শাক খাবার নিয়ম ও উপকারিতা
আমাদেরআজকেরআলোচনারবিষয়ছিলোকলমি শাক খাবার নিয়ম ও উপকারিতা নিয়ে।আমাদেরআর্টিকেলটিযদিআপনাদেরভালোলেগেথাকেতবেশেয়ারকরুনআপনাদেরসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসলে আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক
হবে।আপনাদেরমূল্যবানমতামতজানানকমেন্টসেকশনে। আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url