রাসুলুল্লাহর যে সকল সুন্নাত রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইস্তেখরা
এবং ইস্তেখরার নামাজ। ইস্তেখরা (استخارة) আরবি শব্দ, এর আভিধানিক অর্থ,' কল্যাণ কামনা করা বা এমন কিছু কামনা করা
যাতে কল্যাণ আছে'। আজ আমাদের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় ইস্তেখরা কি এবং
ইস্তেখরার নামাজ কখন পড়তে হয়।
আশা করি আমাদের পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন কথা না
বাড়িয়ে জেনে নেই ইস্তেখরা কি এবং ইস্তেখরার নামাজ কখন পড়তে হয়।
নতুন কোন কাজ শুরুর পূর্বে বা কোন কাজে দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগলে ইস্তেখরা করতে হয়।
দুই রাকাত সালাত এবং বিশেষ দুয়ার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের সাহায্য প্রার্থণা করা
কে ইস্তেখরা বলা হয়।- ইবনে মাজার, ফাতহুল বারি, সহিহ বুখারি।
ইস্তেখরার নামাজ কখন পড়তে হয়
যেমনটা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে সালাতুল ইস্তেখরা বা ইস্তেখরার নামাজ আদায় করতে
হয় নতুন কোন কাজ শুরুর পুর্বে সে কাজে যেন কল্যান ও রহমত আসে তার জন্য এবং কোন
বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনে দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগলে সেক্ষেত্রে। তবে শর্ত থাকে যে, কোন
হারাম বা মাকরূহ কাজের জন্য ইস্তেখরার নামাজ আদায় করা যাবে না।
আর যদি সময়ের ব্যাপারে বলা যায়, তাহলে নামাজের জন্য নিষিদ্ধ সময় ব্যাতিত যেকোন
সময়েই ইস্তেখরার নামাজ পড়া যায়। কেবল রাতে বা মাঝ রাতে এই নামাজ পড়তে হবে
এমন কোন কথা নেই।
ইস্তেখরার নামাজের ফজিলত
ইস্তেখরার নামাজ নফল হলেও অনেক আলেমের মতে এটি সুন্নত। ইস্তেখরার নামাজ এর
মাধ্যমে আমরা উত্তম ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এর ফজিলত এর ব্যাপারে নিম্নে
আলোচনা করা হলোঃ
১. আল্লাহ পাক বলেছেন, "এটা তো খুবই সম্ভব, যে তোমরা একটা জিনিসকে মন্দ মনে করো অথচ তা তোমাদের জন্য
কল্যাণকর, আবার এটাও সম্ভব যে তোমরা কোন জিনিসকে ভালো মনে করো কিন্তু তা
তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর প্রকৃত বিষয় তো আল্লাহ পাক জানেন এবং তোমরা জানো
না- (সুরা বাকারা- আয়াত ২১৬)"
২. আল্লাহ পাক আরো বলেছেন,
"এবং মানুষের সাথে পরামর্শ করতে থাকুন, অতঃপর যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন
তখন আল্লাহর উপর ভরসা করুন। নিশ্চই আল্লাহ ভরসাকারীদের ভালোবাসেন। -
(সূরা আল ইমরান - আয়াত ১৫৯)"
৩.মানুষ ইস্তেখরার নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তি হয় এবং
সফলতার দিকনির্দেশ পায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন," তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, অনুরোধ কর, সংগোপনে। - (সূরা আরাফ - আয়াত
৫৫)।
ইস্তেখরার নামাজ পড়ার নিয়ম অন্য সকল নফল নামাজের মতই। দুই রাকাত নফল নামাজ
পড়ে ইস্তেখরার বিশেষ দুয়া পাঠ করতে হবে।হজরতজাবেরইব্নেআব্দুল্লাহ (রা.) থেকেবর্ণিত, "রাসুলুল্লাহসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন কোন কাজের সংকল্প করে তখন দুই রাকাত
নফল সালাত আদায় করে এবং এই দুয়াটি পাঠ করে-
আজকে আমাদের আর্টিকেলের মূল বিষয় ছিলো, ইস্তেখরা কি? ইস্তেখরার নামাজ কখন পড়তে
হয়। এর সাথে ইস্তেখরার নামাজ এর নিয়ম এবং ফজিলত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহ
পাক আমাদের ইস্তেখরার নামাজ আদায় এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) এর এই সুন্নাত পালন
করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url