ডায়াবেটিস । কারন, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ

পরিচিতি ঃ ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস যাকে বাংলায় মধুমেহ বা বহুমূত্র রোগ বলা হয়, আজকাল অত্যন্ত সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। তবে অনেকে আছেন যারা জানেনই না যে তার ডায়াবেটিস আছে। অন্য কোন জটিলতা বা অসুখের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানা যায় তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।  আজ আমাদের ব্লগের আলোচ্য বিষয় ডায়াবেটিস এর কারন, চিকিৎসা, প্রতিরোধ।

আশা করি এ বিষয়ে জানতে আমাদের পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন যাওয়া যাক মূল পোস্টে।

পোস্ট সুচিপত্রঃ ডায়াবেটিস । কারন, চিকিৎসা, প্রতিরোধ

  • ভূমিকা
  • ডায়াবেটিস কি
  • ডায়াবেটিস এর কারণ

ডায়াবেটিস কি

সাধারণত খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি -এর বেশি থাকে আর খাওয়ার পর যদি ১১-এর বেশি থাকে, তখন সেই অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে।

ডায়াবেটিস এর কারন

মানব দেহে ইনসুলিন নামক হরমোন তৈরী না হওয়া বা অপর্যাপ্ত ইনসুলিন নিঃসরণের ফলে ঠিকমত শর্করা পরিপাক না হওয়ার সমস্যাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। মানব দেহে অগ্নাশয় নামক অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন তৈরী হয়। অগ্নাশয় এর সঠিক কার্যকারিতার অভাবেই ডায়াবেটিস হয়। ডায়াবেটিস কয়েক প্রকার হতে পারে, যেমনঃ
১. টাইপ - ১ ডায়াবেটিস
২. টাইপ - ২ ডায়াবেটিস
৩. গর্ভকালিন ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

ডায়াবেটিসের বিবিধ কারণ রয়েছে, তবে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে ধরে নেয়া যায়, একজন ব্যাক্তির ডায়াবেটিস আছে।
১. হঠাৎ হঠাৎ তীব্র ক্ষুধা, ক্ষুধা লাগলে সংবরণ করতে না পারা।
২. ক্ষুধা লাগলে চোখে ঝাপসা দেখা বা মাথা ঘুরানো।
৩. হঠাৎ বিনা কারণে ওজন হ্রাস।
৪. বার বার প্রস্রাবের বেগ আসা। 
৫. ক্ষত বা কাটা সারতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগা।
৬. মেজাজ খিটমিটে থাকা 
৭. সহজে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া।
৮. চামড়ায় শুস্কতা, খসখসে ভাব।
৯. মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি দুর্বলতা।
১০. ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া, পানি খেলেও তৃষ্ণা না মেটা।

ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যার স্থায়ী কোন চিকিৎসা বা প্রতিকার নেই। নিয়মিত জীবন ধারণ ও ওষুধ গ্রহনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়। সাধারণত ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করা যায়।
১. ওষুধ গ্রহণঃ
        ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ যেমন, মেটামরফিন, লিনগ্লিপটিন ইত্যাদি মুখে খাবার ওষুধ দেয়া হয়। এসকল ওষুধ অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে খেতে হবে।     
২. ইনসুলিন গ্রহণঃ
            ডায়াবেটিসের  চিকিৎসায় ব্যাবহৃত অন্যতম একটি পদ্ধতি হচ্ছে ইনসুলিন গ্রহণ। সাধারণত রক্তে শর্করার মাত্রা বুঝে নির্দিষ্ট মাত্রায় ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয়। ইনসুলিন সাধারণত চামড়ার নিচে নেয়া হয়।
৩. পরিমিত খাদ্য-গ্রহণঃ
            ডায়াবেটিস রোগিদের যেহেতু শর্করা ঠিকমত বিপাক হয় না তাই  শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডায়াবেটিস রুগিদের চিনি জাতিয় খাদ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ফলমুল গ্রহনেও সতর্কতা থাকতে হবে। 
৪. নিয়মিত শরীরচর্চাঃ
            ডায়াবেটিস রোগিদের নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ব্যায়াম করতে হয়। বিশেষ করে প্রতিদিন নিয়ম করে হাটতে হয়। হাটার গতি এমন হতে হবে যেন শরীর বেশ খানিকতা ঘেমে যায়। তবে হাটার বা শরীরচর্চার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন রক্তে শর্করা শূন্য হওয়া বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া না হয়ে যায়। 

ডায়াবেটিস এর প্রতিরোধ

সাধারণত বংশগত কারনে ডায়াবেটিস হলে তা ঠেকানো যায় না, তবে কিছু নিয়ম কানুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়, যেমন অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, নিয়মিত শরীর চর্চা করা, নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান। যাদের পরিবারে  ডায়াবেটিস এর ইতিহাস আছে তাদের নিয়মিত শরীরচর্চা এবং রক্তে শর্করার পরিমান পরিমাপ করা উচিৎ।

শেষ কথাঃ ডায়াবেটিস । কারন, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ

ডায়াবেটিস একটি জটিল এবং নিরাময় অযোগ্য ব্যাধি। নিয়ন্ত্রনে না থাকলে এটি থেকে আরও বিভিন্ন রকম ব্যাধি ও জটিলতা দেখা দিতে পারে। আমাদের আজকের আর্টিকেলের আলোচ্য সূচি ছিলো ডায়াবেটিস এর কারন, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ নিয়ে। আশা করি আমাদের আর্টিকেল আপনাদের ভাল লেগেছে। ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪