সোনা মসজিদ । কোথায় অবস্থিত এবং কেন বিখ্যাত

পরিচিতিঃ সোনা মসজিদ । কোথায় অবস্থিত এবং কেন বিখ্যাত

 সোনা মসজিদ (ভিন্ন নাম ছোট সোনা মসজিদ)  বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ।মসজিদটিকে ্সুলতানি স্থাপত্যের রত্ন বলা হয়ে থাকে । কথিত আছে যে,  অতীতে সোনা মসজিদের বাইরের দিকে সোনালি রং এর আস্তরণ ছিল বা অনেকে বলেন সরাসরি সোনার প্রলেপ দেয়া ছিল। সূর্যের আলো পড়লে সেই রং সোনার মতো ঝলমল করত। সেজন্য এর নাম হয়েছে সোনা মসজিদ।

 
প্রধান প্রবেশ পথের উপরিভাগে স্থাপিত একটি শিলালিপি অনুযায়ী জনৈক মনসুর ওয়ালী মুহম্মদ বিন আলী কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত হয়। শিলালিপিতে নির্মানের সঠিক তারিখ সম্বলিত অক্ষরগুলি মুছে গেছে। তবে এতে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এর নামের উল্লেখ রয়েছে যা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, সোনা মসজিদ তার রাজত্বকালের (১৪৯৪-১৫১৯) কোন এক সময় নির্মিত। সুলতানী আমলের স্থাপত্যকীর্তিগুলোর মধ্যে নির্মাণ শৈলির দিক থেকে সোনা মসজিদ  একটি অনন্য ও অন্যতম নিদর্শন।

সোনা মসজিদ কোথায় অবস্থিত 

প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড় নগরীর উপকন্ঠে পিরোজপুর গ্রামে এ স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিলো, যা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে সোনামসজিদ স্থলবন্দরগামী মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত।
প্রাচীন গৌড়ে আরেকটি মসজিদ ছিল যা বড় সোনা মসজিদ নামে পরিচিত। এটি তৈরি করেছিলেন সুলতান নুসরত শাহ। আকারে সেটি   পেক্ষাকৃত বড় ছিল তাই স্থানীয় লোকজন নগরীর বাইরে থাকা এই মসজিদকে ছোট সোনা মসজিদ বলে অবহিত করতো। আর গৌড় নগরীর ভেতরের মসজিদটিকে বলতো বড় সোনা মসজিদ, এটি বর্তমানে ভারতের মালদহে অবস্থিত। 

সোনা মসজিদ  কেন বিখ্যাত

সোনা মসজিদ সুলতানি আমলের মসজিদ এবং তার  সাথে আরো কিছু সংশ্লিষ্ট স্থাপনার জন্য বিখ্যাত। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ
সোনা মসজিদঃ
সোনা মসজিদ প্রায় ৫০০ বছরের বেশি পুরনো ঐতিহাসিক একটি স্থাপনা। এটিতে ইটের দেয়ালের উপর গ্রানিটের টালি ব্যাবহার করা হয়েছে। সুলতানি স্থাপত্য রীতিতে তৈরি এ মসজিদে ১২ টি গম্বুজ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে পাথরের তৈরি একটি বিশালাকৃতির তোরণ। এছাড়া মসজিদের বিভিন্ন অংশে রয়েছে সুদৃশ্য অলংকরণ। মসজিদ এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু বাধান কবর, যার মধ্যে দুটি কবর কালো পাথর দ্বারা বাধানো। ঐতিহাসিক কানিংহামের মতে, এ কবর দুটি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা  মনসুর ওয়ালী মুহম্মদ বিন আলী এবং তার পিতা মুহাম্মাদ বিন আলির।
বীরশ্রেষ্ঠের সমাধিঃ
সোনামসজিদ প্রাংগনে শায়িত আছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠের একজন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাংগির এবং ৭ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক টুলু।
সোনা মসজিদ স্থলবন্দরঃ
সোনা মসজিদ থেকে এক কি.মি. এর মত দুরুত্বে সোনা মসজিদ স্থল বন্দর অবস্থিত। এটি দেশের অন্যতম বড় এবং ব্যাস্ত স্থলবন্দর।
তহাখানা কমপ্লেক্সঃ
শাহ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ হলেন মধ্যযুগের একজন প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক। তিনি তৎকালীন গৌড়ে ইসলাম প্রচার করেন। সোনা মসজিদ থেকে আধা কিলোমিটার উত্তর পূর্বে তহাখানা কম্পেক্স এ তার সমাধি রয়েছে। 

সোনা মসজিদ যাবার উপায়

সোনা মসজিদ যেতে হলে প্রথমে রাজশাহী অথবা চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসতে হবে। রাজশাহী থেকে সরাসরি সোনা মসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত বাস সার্ভিস যা "গৌড় স্পেশাল" নামে পরিচিত, তাতে করে অথবা বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসে সেখান থকে অটো বা সিএনজি করে সোনা মসজিদ যাওয়া যায়।

শেষ কথাঃ সোনা মসজিদ । কোথায় অবস্থিত এবং কেন বিখ্যাত

সোনা মসজিদ মধ্যযুগে তথা সুলতানি আমলে বাংলার ইসলাম প্রচারের অন্যতম এক স্বাক্ষি। আশা করি আজকের আর্টিকেল পড়ে সোনা মসজিদ কোথায় অবস্থিত এবং কেন বিখ্যাত তা জানতে পেরেছেন। এমন আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪