রামসাগর দিঘী । কোথায় অবস্থিত এবং কি জন্য বিখ্যাত

পরিচিতিঃ রামসাগর দিঘী । কোথায় অবস্থিত এবং  কি জন্য বিখ্যাত

 রামসাগর দিঘী বাংলাদেশের বৃহত্তম দিঘী। নামের সাথে সাগর থাকলেও এটি কোন সাগর বা সমুদ্র নয় বরং একটি দিঘী। বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এটি। আজকে আমাদের আর্টিকেলে রামসাগর দিঘী নিয়ে আলোচনা করা হবে। 

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানতে পারবো রামসাগর দিঘী কোথায় অবস্থিত এবং কেন বিখ্যাত। তাই পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

রামসাগর দিঘী কোথায় অবস্থিত

রামসাগর বাংলাদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরে অবস্থিত। দিনাজপুর জেলা সদর থেকে ৮ কি.মি. দূরে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের তেজপুর গ্রামে অবস্থিত। রামসাগর দীঘী বাংলাদেশের বৃহত্তম মানবসৃষ্ট দিঘী।  এর ক্ষেত্রফল প্রায় ৪,৩৭,৪৯২ বর্গ মি. রামসাগর দিঘীর দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার এবং প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। রামসাগর দীঘীর গড় গভীরতা গড়ে ১০ মিটার। রামসাগর দীঘীর পশ্চিম পাড়ের মাঝামাঝি জায়গায় একটি ধ্বংসপ্রায় ঘাট রয়েছে।

রামসাগর দিঘীর খনন এবং নামকরণ

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, পলাশী যুদ্ধের কিছুকাল পূর্বে ১৭৫০ সালের দিকে প্রজাহিতৈষি রাজা রামনাথ প্রজাদের পানীয় জলের কষ্ট দূর করার জন্য রামসাগর দিঘী খনন করেন। এবং তার নামানুসারে এ দিঘীর নামকরন করা হয় রামসাগর দিঘী। 
অপর এক জনশ্রুতিতে জানা যায়, রাজা প্রাণনাথ দুর্ভিক্ষ থেকে প্রজাদের বাচাতে রামসাগর দীঘী খননের উদ্যোগ নেন। কিন্তু খননের পরও দিঘীতে পানি না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হন যে, দিঘিতে রাজপুত্র রামনাথকে বলি দিলে তাতে পানি আসবে। সেই মত দিঘীর মাঝে নির্মাণ করা হলো মন্দির। নির্দিষ্ট দিনে রাজপুত্র রামনাথ  সেই মন্দিরের দিকে রওয়ানা হলেন। দিঘীর সিড়ি দিয়ে নামতেই দিঘীতে পানি উঠা শুরু হয়। রাজপুত্র রামনাথ সেই পানিতে তলিয়ে যান। 
তার বলিদান স্মরণিয় করে রাখতেই দিঘীর নামকরন হয় রামসাগর দিঘী। তবে এগুলোর তেমন কোন নির্ভরযোগ্য লিখিত প্রমান পাওয়া যায় না।

রামসাগর দিঘী ।  কি জন্য বিখ্যাত

 রামসাগর দিঘী অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত।  রামসাগর দিঘী উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। রামসাগর দিঘীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে রামসাগর জাতীয় উদ্যান ( Ramsagar National Park).  রামসাগর দিঘী মূলত এর দিঘী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত হলেও এর রয়েছে আরও কিছু গুরুত্ব।
 শীতকালে প্রচুর পরীযায়ি পাখি আসে এখানে। রামসাগর দিঘীর পাড়ের জাতীয় উদ্যানে রয়েছে আম, জাম, কাঠাল ,নাগেশ্বর, বট সহ প্রায় ১৫২ প্রজাতির গাছ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ। প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে এখানে বসে বারুণি মেলা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রামসাগর দিঘীতে প্রাণ বলিদানকারী রাজপুত্র রামনাথ এর প্রাণ বিসর্জন স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছরের এই দিনে এখানে স্নান করতে এসে থাকেন। 
বর্তমান অবস্থাঃ
১৯৬০ সালে  রামসাগর দিঘী কে বন বিভাগের আওতায় আনা হয়। ১৯৯৫ সালে  রামসাগর দিঘী কে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র এবং ২০০১ সালে এর সংলগ্ন বন কে জাতীয় উদ্যান ঘোষনা করা হয়। বর্তমানে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, যেখানে আছে বানর, অজগর এবং হরিণ।
চিড়িয়াখানা থেকে বের হয়ে হাতের বাঁ পাশে রামসাগর শিশুপার্ক। এখানে রয়েছে বেশ কিছু প্রাণির মূর্তি। বর্তমানে রামসাগর দিঘী  বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখানে থাকার জন্য রয়েছে বন বিভাগের একটি বিশ্রামাগার। 

শেষ কথাঃ রামসাগর দিঘী । কোথায় অবস্থিত এবং  কি জন্য বিখ্যাত

আজকের আর্টিকেল থেকে আশা করি আপনারা রামসাগর দিঘী কোথায় অবস্থিত এবং এটি কেন বিখ্যাত তা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এমন আরও তথ্য বহুল আর্টিকেল জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের এই পোস্ট যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে শেয়ার করুন আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর আপনাদের মূল্যবান মতামত জানান কমেন্ট সেকশনে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪