নিম । উপকারিতা ও ব্যাবহার
পরিচিতিঃ নিম । উপকারিতা ও ব্যাবহার
নিম একটি বহুল পরিচিত উপকারি এবং ঔষধি সহ বিবিধ গুনসম্পন্ন উদ্ভিদ। নিমের ইংরেজি নাম Neem, বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica । নিমকে নিম্ব, ভেপা, তামার সহ বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। সংস্কৃত ভাষায় নিমকে বলা
হয় "অরিষ্ট" যার অর্থ "রোগের মুক্তিদাতা"। নিম আমাদের এক বিশেষ উপকারী বন্ধু
বৃক্ষ। নিম আদিকাল হতেই জনপ্রিয় এবং পরিচিত ।
ফিচার ইমেজ ক্রেডিটঃ pixabay |
নিম এর উপকারিতা এবং ব্যাবহার
নিম এমন এক বৃক্ষ যার পাতা থেকে শুরু করে মূল বা শিকড় পর্যন্ত সবই
উপকারি। এই সব গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
(WHO) নিম কে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে। এমন কি কথায় বলে নিম গাছের হাওয়াও শরীরের জন্য ভালো আসুন জেনে নেয়া যাক নিমের উপকারিতা কি কি
বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর অ্যান্টিসেপটিক, ব্যাকটেরিয়া-রোধক, ছত্রাকনাশক, ভাইরাসরোধক, কীট-পতঙ্গ বিনাশক হিসেবে ব্যহারের জন্য।
১. কাশি জনিত বুকের ব্যথা: অনেক সময় বুকে কাশি জমে বুক ব্যথা হয়। এ
থেকে উপশম পাবার জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রস সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে
দিনে ৩ থেকে ৪ বার করে খেলে কাশি ও বুকের ব্যথা দূর হবে।
তবে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্ক দের জন্য এ ঔষধটি নিষিদ্ধ।
২. কৃমি নাশক হিসেবে: পেটে কৃমির সমস্যা হলে শিশুরা এমনকি বয়স্করাও রোগা ও দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের তুলনায় পেটের আকার বড় হয়ে যায়। চেহারা ফ্যকাশে দেখায়। এ জন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিনে তিন বার সামান্য উষ্ণ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে।
২. কৃমি নাশক হিসেবে: পেটে কৃমির সমস্যা হলে শিশুরা এমনকি বয়স্করাও রোগা ও দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের তুলনায় পেটের আকার বড় হয়ে যায়। চেহারা ফ্যকাশে দেখায়। এ জন্য ৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিনে তিন বার সামান্য উষ্ণ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কৃমি দূর করার উপায়
অথবা ৩ থেকে ৮ গ্রাম নিম ছাল চূর্ণ সামান্য পরিমাণ সৈন্ধব লবণসহ সকালে
খালিপেটে সেবন করে গেলে কৃমির উপদ্রব হতে রক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত ১ সপ্তাহ
সেবন করতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ গ্রাম মাত্রায় সেবন করাতে
হবে। ৩.উকুন দূর করতে: উকুন দুর করতে নিমের পাতা বেটে অথবা নিমের তেল
হালকা করে মাথায় ও চুলে লাগান। ঘন্টা খানেক রেখে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩
দিন এভাবে ব্যাবহার করলে উকুন দুর হবে।
আরও পড়ুনঃ উকুন দূর করার উপায়
৪. অজীর্ণ বা বদহজম: অনেকদিন ধরে পেটের অসুখ, অজীর্ণ বদহজম ইত্যাদিতে
নিম উপকারি। পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, সিকি কাপ পানির
সঙ্গে মিশিয়ে সকাল- বিকাল খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
৫. খোস পাচড়া: নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া দুর হয়। নিমপাতা বা নিম ফুল বেটে গায়ে নিয়মিত কয়েকদিন লাগালে খোসপাচড়া/চুলকানি ভালো হয়। নিম পাতার সাথে সামান্য পরিমাণে কাঁচা হলুদ বেটে নিয়ে খোস-পাচড়ায় কিছু দিন ব্যবহার করলে খোস-পাঁচড়া দুর হয়।
৬. পোকা-মাকড়ের দংশন: পোকা মাকড় কামড় দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা নিম পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে এবং জ্বালা পোড়া কমে যাবে।
৫. খোস পাচড়া: নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া দুর হয়। নিমপাতা বা নিম ফুল বেটে গায়ে নিয়মিত কয়েকদিন লাগালে খোসপাচড়া/চুলকানি ভালো হয়। নিম পাতার সাথে সামান্য পরিমাণে কাঁচা হলুদ বেটে নিয়ে খোস-পাচড়ায় কিছু দিন ব্যবহার করলে খোস-পাঁচড়া দুর হয়।
৬. পোকা-মাকড়ের দংশন: পোকা মাকড় কামড় দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা নিম পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে এবং জ্বালা পোড়া কমে যাবে।
আরও পড়ূনঃ কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম
৭. দাতের রোগ: নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা পাবে দন্তক্ষয় সহ বিভিন্ন রোগ থেকে। দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুবই উপকারী। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আর দাঁতের ফাঁকে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করতে নিম এর দাতন বা মেসওয়াক বেশ কার্যকরী।
৮. ব্রনের সমস্যায়ঃ ব্রনের সমস্যায় নিম পাতার প্যাক মেখে ব্রন এর থেকে পরিত্রান পেতে পারেন৷ চার পাঁচটা নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে পিষে নিন ৷ এর মধ্যে এক চামচ মূলতানি মাটি, অল্প গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন ৷
৭. দাতের রোগ: নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা পাবে দন্তক্ষয় সহ বিভিন্ন রোগ থেকে। দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুবই উপকারী। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আর দাঁতের ফাঁকে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করতে নিম এর দাতন বা মেসওয়াক বেশ কার্যকরী।
৮. ব্রনের সমস্যায়ঃ ব্রনের সমস্যায় নিম পাতার প্যাক মেখে ব্রন এর থেকে পরিত্রান পেতে পারেন৷ চার পাঁচটা নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে পিষে নিন ৷ এর মধ্যে এক চামচ মূলতানি মাটি, অল্প গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন ৷
আরও পড়ুনঃ
ব্রণের সমস্যা দূর করবেন যেভাবেপ্যাকটা যদি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে তার মধ্যে আরেকটু গোলাপ জল
মিশিয়ে নিন ৷ মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষন রেখে দিন ৷ প্যাকটা মুখে শুকিয়ে
গেলে হালকা উষ্ণ পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন৷
৯. মাথার ত্বকের চুলকানি দূর করতেঃ মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি হয়। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এ চুলকানি কমে যায়।
১০. খুশকি দূর করতে নিমঃ চুলের খুসকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসেজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। খুশকি দূর হয়ে যাবে।
৯. মাথার ত্বকের চুলকানি দূর করতেঃ মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি হয়। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এ চুলকানি কমে যায়।
১০. খুশকি দূর করতে নিমঃ চুলের খুসকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসেজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। খুশকি দূর হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ খুশকি দূর করার উপায়
১১. জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিম : নিম তেল এক নতুন ধরনের
কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে। নিম এর তেল একটি শক্তিশালী
শুক্রানুনাশক হিসেবে কাজ করতে পারে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা গবেষনায়
দেখেছেন যে, এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে
সক্ষম।
ছবিঃ নিম গাছ (neem-tree)। ছবি ক্রেডিটঃ pixabay |
১২. ফসলের পোকামাকড় দমনেঃ ফসলের পোকামাকড় দমনে নিম এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শুকনো নিমপাতা
ধান-চালের গোলায় বা ডাল, গমের পাত্রে রাখলে এসব খাদ্যশস্য পোকার আক্রমণ থেকে
রক্ষা পায়। ১ অংশ নিম পাতা বাটার সাথে ১০ অংশ পানি মিশিয়ে পোকা
আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করলে পোকামাকর দমন হয়।
১৩. রক্ত পরিষ্কারক ও চর্মরোগ নিবারণে: কাঁচা নিম পাতা ১০ গ্রাম পরিমাণে ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ (এক) কাপ অবশিষ্ট থাকতে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং চর্ম রোগ কমে যায়। এ ওষুধটি প্রতিদিন ২-৩ বার, নিয়মিত ১-২ মাস খেতে হবে।
১৩. রক্ত পরিষ্কারক ও চর্মরোগ নিবারণে: কাঁচা নিম পাতা ১০ গ্রাম পরিমাণে ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ (এক) কাপ অবশিষ্ট থাকতে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং চর্ম রোগ কমে যায়। এ ওষুধটি প্রতিদিন ২-৩ বার, নিয়মিত ১-২ মাস খেতে হবে।
শেষ কথাঃ নিম । উপকারিতা ও ব্যাবহার
নিম অত্যন্ত উপকারি একটি বৃক্ষ। তবে নিমের কোন অংশ সেবন করার পূর্বে
অভিজ্ঞ চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। নিমের ইতোমধ্যে
বহুবিধ ব্যাবহার আবিস্কার হয়েছে, তবে নিম এতটাই বৈচিত্র ময় বৃক্ষ যে এটি আরও
অনেক বেশি গবেষনার দাবি রাখে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা নিমের
অনেক উপকারিতা ও ব্যাবহার জানতে পেরেছেন। এমন আরও
নতুন নতুন তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url