জানাজার নামাজের নিয়ম, গুরুত্ব এবং ফজিলত
ভূমিকাঃ জানাজার নামাজের নিয়ম, গুরুত্ব এবং ফজিলত
পৃথিবীতে কেউই চিরজীবি নয়। সবাইকে একদিন না একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে।
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআন শরীফে বলেছেন, "প্রত্যেক প্রাণিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ
করতে হবে। (সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৮৫)"। আরবি ‘জানাজা’ শব্দের অর্থ মৃতদেহ। আর জানাজার নামাজ অর্থ মৃতদেহের
নামাজ। কোন মুসলিম মৃত্যুবরণ করলে তাকে দাফনের পুর্বে যে সমবেত প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হয়
তাকে জানাজার নামাজ বলে।
জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া অর্থাৎ এলাকা,মহল্লা বা গোত্রের কেউ আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। কিন্তু কেউ আদায় না করলে সকলেই গুনাহগার হবেন।
আরও পড়ুনঃ নিজের মৃত্যুর স্বপ্ন দেখলে কি হয়
আজকের আর্টিকেলে আমরা জানাজার নামাজের নিয়ম, গুরুত্ব এবং ফজিলত
সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই জানাজার নামাজের নিয়ম, গুরুত্ব এবং ফজিলত
সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনযোগ সহকারে পড়ুন এবং কোন মতামত থাকলে তা কমেন্ট
সেকশনে জানান।
জানাজার নামাজের নিয়ম
জানাজার নামাজ সাধারণত নিম্নলিখিত নিয়মে আদায় করা হয়ঃ
১. মৃত ব্যক্তিকে কিবলার দিকে সামনে রেখে ইমাম ও মুসল্লিরা দাড়াবেন।
২. মুসল্লিরা ইমামের পিছনে কিবলামুখী হয়ে দাড়াবেন।
২. মুসল্লিরা ইমামের পিছনে কিবলামুখী হয়ে দাড়াবেন।
৩. মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার পাশে দাড়াবেন। আর নারী হলে খাটিয়ার মাঝ বরাবর দাড়াবেন। মৃত ব্যক্তির মাঝ বরাবর দাঁড়ানো যেতে পারে।
৪. জানাযা নামাজের নিয়ত করে চার তাকবিরের সহিত নামাজ আদায় করতে হবে।
৫. কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত দু’হাত উত্তোলন করে 'আল্লাহু আকবার' বলে নিয়ত বাঁধতে হবে।
৬. অন্যান্য ফরজ নামাজের মত ডান হাত কে, বাম হাতের উপরে রাখা।
৭. ছানা পড়া।
৮. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরূদে ইবরাহিম পড়া।
৯. তৃতীয় তাকবির দিয়ে ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
১০. ৪র্থ তাকবির ের পরে ডানে এবং বামে সালাম ফেরাতে হবে ও এর মাধ্যমে জানাযার নামাজ শেষ করতে হবে।
৫. কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত দু’হাত উত্তোলন করে 'আল্লাহু আকবার' বলে নিয়ত বাঁধতে হবে।
৬. অন্যান্য ফরজ নামাজের মত ডান হাত কে, বাম হাতের উপরে রাখা।
৭. ছানা পড়া।
৮. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরূদে ইবরাহিম পড়া।
৯. তৃতীয় তাকবির দিয়ে ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
১০. ৪র্থ তাকবির ের পরে ডানে এবং বামে সালাম ফেরাতে হবে ও এর মাধ্যমে জানাযার নামাজ শেষ করতে হবে।
১১. জানাজার নামাজ কেবলমাত্র জামাতের সাথেই পড়া যায়, তাই এটি কাজা করে আদায়ের
কোন সুযোগ নেই।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কেবল প্রথম তাকবিরে হাত তুলতে হবে, অন্য কোন তাকবিরে হাত
তুলার দরকার নেই।
আরও পড়ুনঃ সালাতুল তাসবিহ নামাজ কখন পড়তে হয়?
জানাজার নামাজের গুরুত্ব
মুসলিমদের জন্য জানাজার নামাজ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে এর গুরুত্ব সংক্ষেপে
আলোচনা করা হলোঃ
- জানাজার নামাজ মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে ,ইহকালীন জীবন ক্ষণস্থায়ী। মৃত্যুই সত্য।
- জানাজার নামাজের মাধ্যমে মৃতের গুনাহ ক্ষমা হয়।
- জানাজার নামাজ স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানুষ তার ঈমান ও আমল ছাড়া কিছুই সাথে নিয়ে যেতে পারে না, সুতরাং মানুষকে ইহকাল নয় বরং পরকাল এর ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
- জানাজার নামাজের মাধ্যমে আত্মিয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব মৃতকে বিদায় দেবার মানসিকতা অর্জন করে।
- জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া, এলাকার কেউ যদি আদায় না করেন তবে সকলেই গুনাহ এর ভাগিদার হবেন।
- কোনো মুসলমান মারা গেলে তার জানাজার নামাজ পড়া এবং তার কবর জিয়ারত করা সওয়াবের কাজ। এমনকি পাপি মুসলিম মৃত্যুবরণ করলে তারও জানাজার নামাজ আদায় করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের উপর জানাজার নামাজ পড়া ওয়াজিব, তা সে নেক কার হোক বা বদ কার, যদিও সে কবিরা গুনাহ করে।’ (সূত্রঃ আবু দাউদ: ১/৩৫০)
জানাজার নামাজের ফজিলত
- হাদিসে এসেছে জানাজার নামাজে উহুদ পরিমান সওয়াব অর্জিত হয়। (সূত্রঃ বুখারি জানাজা অধ্যায় হাদিস নং- ১৩১৩২৭/ মুসলিম জানাজা অধ্যায় হাদিস নং-৯৫১)
- জানাজার নামাজের মাধ্যমে মৃতের জানা-অজানা গুনাহ মাফের সুযোগ তৈরী হয়। জানাজার নামাজ মুসল্লিদের জন্য সাওয়াব অর্জন এবং মৃত ব্যক্তির জন্য গুনাহ মাফের সুপারিশ।
শেষ কথাঃ জানাজার নামাজের নিয়ম, গুরুত্ব এবং ফজিলত
ইসলামি শরিয়তে জানাজা, কাফন-দাফন ইত্যাদি জীবিত মুসলমানদের ওপর মৃতদের
অধিকার। জানাজার নামাজ পড়া ফরজে কেফায়া তথা সামগ্রিক ফরজ। আল্লাহ পাক
আমাদের সঠিকভাবে জানাজার নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url