হলুদ । ব্যাবহার ও উপকারিতা

পরিচিতঃ হলুদ । ব্যাবহার ও উপকারিতা

হলুদ আমাদের অতি পরিচিত একটি পণ্য। একে আমরা কেবল মসলা বা রঙ হিসেবে জানলেও এর আছে আরো অনেক গুন। হলুদ বা অনেক সময় হলদি নামে পরিচিত হচ্ছে হলুদ গাছের মূল বা শিকড় যা মসলা, রঙ এমনকি ওষুধ হিসেবেও ব্যাবহৃত হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Curcuma longa, ইংরেজিতে এটি  Turmeric নামে পরিচিত। 

ফিচার ইমেজ ক্রেডিটঃ pixabay
প্রাচীন কাল থেকেই রান্না, রূপচর্চা এবং ওষুধ হিসেবে হলুদ ব্যাবহার হয়ে আসছে। হলুদ শব্দটির সঠিক উৎপত্তি জানা না গেলেও এর বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের (curcuma) উৎপত্তি আরবি ভাষা থেকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানব হলুদের ব্যাবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে।

হলুদ । ব্যাবহার ও উপকারিতা

প্রাত্যাহিক জীবনে হলুদ এর ব্যাবহার  ও উপকারিতা বহুবিধ, তবে হলুদ এর ব্যাবহার ও উপকারিতা কে আমরা নিম্নলিখিত ভাবে আলোচনা করতে পারি। 
রান্নার কাজে হলুদঃ
হলুদ ছাড়া বলতে গেলে বাংগালি রান্না অচল। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের রান্নায় হলুদ ব্যাবহার হয়। হলুদ খাবারে যোগ করে অপূর্ব রং, ঘ্রাণ এবং স্বাদ। আমিষ বা নিরামিষ সব খাবারেই হলুদের ব্যাবহার রয়েছে। তবে রান্নার কাজে কেবল হলুদ গুড়া ব্যাবহার হয়, কাঁচা হলুদের ব্যাবহার রান্নায় তেমন একটা দেখা যায় না। হলুদ গুড়া সরাসরি বা পানিতে মিশিয়ে পেস্ট করে এবং অন্যান্য মসলার সাথে ব্যাবহার করা হয়।
রূপচর্চায় হলুদঃ
১. ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষায় এবং বলিরেখা কমাতে কঁচা হলুদের পেস্ট নিয়মিত ব্যাবহার করা যায়।
২.কাঁচা হলুদ এবং মধুর পেস্ট ত্বকের আদ্রতা রক্ষায় খুবই উপকারি।
৩. অবাঞ্ছিত লোমের বৃদ্ধি রোধে হলুদের জুড়ি নেই, হলুদ এবং পানির পেস্ট অবাঞ্ছিত লোমের জায়গায় স্ক্রাব হিসেবে ব্যাবহার করলে অবাঞ্ছিত লোমের বৃদ্ধি রোধ হবে।
৪. ত্বক ব্রণমুক্ত রাখতে হলুদ এবং মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে। হলুদের এই প্যাক নিয়মিত ব্যাবহারে ত্বক থাকবে ব্রণ মুক্ত। 
৫.ত্বক ব্রণ্মুক্ত রাখতে হলুদ এবং মুলতানি মাটির মিশ্রণ ব্যাবহার করা যেতে পারে। 
ভেষজ ওষুধ হিসেবে হলুদঃ
কেবল রূপচর্চা ও রান্নায় নয় ভেষজ ওষুধ হিসেবেও হলুদ অনন্য। নিম্নে এর ওষুধি গুনের কিছু আলোচনা করা হলোঃ
১. কৃমিনাশক হিসেবেঃ ১৫ -২০ ফোঁটা কাঁচা হলুদের রস এর সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমি দূর হয়। হলুদের কৃমিনাশক এই গুনের জন্য হলুদ কে সংস্কৃত ভাষায় 'কৃমিঘ্ন' বলা হয়।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ হলুদে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান অন্ত্র, স্তন এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রতিরোধে কাজ করে।
৩. চর্মরোগের প্রতিরোধেঃ হলুদে বিদ্যমান এন্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান সমূহ চর্মরোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়।
৪.সর্দি-কাশি সারাতে হলুদঃ সর্দি কাশি সারাতে হলুদের জুড়ি নেই। হলুদের রসের সাথে মধু মিশিয়ে বা দুধের সাথে হলুদের রস এবং গোলমরিচের গুড়া মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশি উপশম পাওয়া যায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ হলুদে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি উপকারি মৌল। প্রতিদিন দুধ, মধু বা পানির সাথে হলুদের রস বা গুড়ো খেলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষ্মতা বাড়িয়ে তুলে অনেক গুনে।
৬. ব্যাথা সারাতেঃ শরীরে কোথাও ব্যাথা পেলে বা আঘাত পেলে সেখানে চুন, হলুদ ও লবণ মিশিয়ে লাগিয়ে সেঁক দিলে উপকার মেলে।
৭.যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে হলুদঃ নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে পুরুষের টেস্টোস্টেরন মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।
৮.রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনেঃ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে হলুদ খুবই কার্যকর। নিয়মিত খেলে তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে।
৯.অনিয়মিত ঋতুস্রাবের উপশমেঃ মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে হলুদ বেশ উপকারি। কাঁচা হলুদ বা হাল্কা গরম দুধের সাথে হলুদ গুড়া অনিয়মিত মাসিক এবং এর ব্যাথা থেকে মুক্তি দেয়।
১০. লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ পুষ্টিবিদ সালোনি জাভেরি এর মতে, হলুদে থাকা কারকিউমিন লিভারে জমে থাকা টক্সিন বের করে দিয়ে লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

শেষ কথা - হলুদ । ব্যাবহার ও উপকারিতা

আমাদের আজকের আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় ছিলো হলুদ এর  ব্যাবহার ও উপকারিতা নিয়ে । আশা করি পোস্টটি পড়ে নতুন কিছু জানতে পেরেছেন। এরকম আরো নতুন পোস্ট পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের সাইট।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪