ডেঙ্গু জ্বর (Dengue Fever) - ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ।
পরিচিতিঃ ডেঙ্গু জ্বর (Dengue Fever) - ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ।
বর্তমানে ডেংগু জ্বর বেশ ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। তবে ডেংগু হলেই আতংকিত হবার কিছুই নেই। বরং সচেতনতা এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে খেয়াল রাখতে হবে চিকিৎসা অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নিতে হবে।
আজকের আর্টিকেলে ডেংগু জ্বরের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাই ডেংগু জ্বরের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে এবং ডেংগু জ্বর থেকে নিজেকে এবং পরিবারের সকলকে নিরাপদ রাখতে আজকের আর্টিকেলটি পুরোটা মনযোগ সহকারে পড়ুন।
ডেংগু জ্বরের চিকিৎসা
১ .ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় বিশেষ কোন ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তবে গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ ঘরোয়া চিকিৎসাতেই কমে যায়।২.চিকিৎসকরা প্যারাসিটামিল জাতীয় ওষুধ দিয়ে ব্যাথা/যন্ত্রণা এবং জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেন।
৩. হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের শিরাপথে (IV) স্যালাইন এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রোলাইট (লবণ) তরল দেওয়া হয়। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় পানি এবং লবণের যোগান বজায় থাকে।
৪. প্লাটিলেট কাউন্ট যদি ১০ হাজারের নিচে নেমে যায় বা শরীরের কোনো অংশ থেকে (যেমন নাক, মাঢ়ি, মলদ্বার বা প্রস্রাবের সাথে) রক্তপাত হলে, প্রয়োজন বোধে প্লাটিলেট বা ফ্রেশ রক্ত দেওয়া যেতে পারে।
৫. ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথা কমানোর জন্য অ্যাসপিরিন,ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন–জাতীয় ওষুধ বা নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) ( যেমনঃ ডাইক্লোফেনাক, ইন্ডোমেথাসিন) গ্রুপের ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গু জ্বরে এ–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর খাদ্য
- ভিটামিন সি (সাইট্রাস বা লেবু জাতীয় ফল, বেরি এবং শাক-সবজিতে পাওয়া যায়),
- জিঙ্ক (সামুদ্রিক মাছ, মটরশুটি এবং বাদামে পাওয়া যায়)
- আয়রন (মাংস, মটরশুঁটিতে পাওয়া যায়)
- ওটমিল (সহজপাচ্য কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ)
- পেঁপে
- ডাবের পানি
- সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা দরকার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য।
ডেঙ্গু হলে অনুচিত খাবার
সহজে হজম হয় না এমন খাবার ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের মোটেও খাওয়া উচিত নয়। উদাহরণস্বরুপ -
- গুরুপাক আমিষ জাতীয় খাবার
- চর্বি
- তৈলাক্ত খাবার
- ভাজাভুজি
- এছাড়াও অনেকে পেপে পাতার রস, নিমের রস এসব খেতে বলে যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তাই তা এড়িয়ে চলা উচিত।
- মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে এর বংশ বিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে।
- পুকুর বা ডোবার পানিতে মশার ডিম ও লার্ভা ধ্বংসে মাছের চাষ করা যেতে পারে।
- কোনো কিছুতে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সরকারি শ্লোগান, "তিনদিনে একদিন, জমা পানি ফেলে দিন" কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
- রাতে বা দিনে যখনই হোক, শোয়ার বা ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে।
- চেষ্টা করুন অতিরিক্ত ঘিঞ্জি বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় না থাকার ।
- বাড়িতে মশারি, মশা তাড়ানোর ঔষধ ব্যবহার করুন।
- ঘরে থাকলেও হাত ও পায়ে মোজা পরুন।
- জানালায় মশা রোধি নেট বা জাল লাগান অথবা দরজা জানালা বন্ধ করে রাখুন।
- এসি থাকলে ব্যবহার করুন।
- এ মশা ঘরে, চৌকির নিচে, পর্দার ভাঁজে, বেসিনের নিচে লুকিয়ে থাকে, তাই এসব জায়গায় মশা মারার ওষুধ বা স্প্রে ব্যাবহার করুন।
- বাইরে যাওয়ার সময় শরীর ঢাকা জামা কাপড় যেমন ফুলহাতা শার্ট, ফুলপ্যান্ট, মোজা এবং জুতা পরুন।
- এই মশা বংশবিস্তার করে পুরনো টায়ার এ জমা পানি, ফুলের টবের পানিতে, রাস্তার ধারে জমা বৃষ্টির পানি, নির্মাণসামগ্রীতে থাকা পানি, পেপসির ক্যান, নারিকেলের খোলায় জমা পানিতে। তাই এসবে যাতে পানি না জমে থাকে তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url