ব্যাংক ড্রাফট কি । ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয়
পরিচিতিঃ ব্যাংক ড্রাফট কি । ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয়
ব্যাংকিং সেক্টরে এবং বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফট (Bank Draft)
অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম। এটি ডিমান্ড ড্রাফট (Demand Draft) বা ডিডি (DD)
নামেও পরিচিত। এটি টাকা লেনদেনের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ এবং সহজ একটি পদ্ধতি।
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানব ব্যাংক ড্রাফট কি এবংব্যাংক ড্রাফট
কিভাবে করতে হয়। তাই ব্যাংক ড্রাফট কি এবং ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয়
সেটা জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পুরোটা মনযোগ সহকারে পড়ুন।
ব্যাংক ড্রাফট কি
খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে ব্যাংক ড্রাফট হচ্ছে টাকা পাঠানোর বা পরিশোধের একটি পদ্ধতি।
ব্যাংক ড্রাফট হচ্ছে, ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা একটি বিশেষ ধরনের কাগজ বা দলিল
বা প্রমাণপ্ত্র যার মাধ্যমে টাকা প্রদান করা হয়। এই টাকা প্রদান, সরকারী বা
বেসরকারী যেকোনো ক্ষেত্রেই সমানভাবে গ্রহণযোগ্য।
ব্যাংকিং পরিভাষায়, ব্যাংক ড্রাফট কে "ডিমান্ড ড্রাফট" বলা হয়ে থাকে। এর কারণ,
হচ্ছে, যেহেতু ড্রাফটে উল্লিখিত পরিমান টাকা আগেই ব্যাংকে জমা করা হয়েছে,
সেহেতু ব্যাংক অঙ্গীকারবদ্ধ থাকেন যে, যিনি এই ব্যাংক ড্রাফটের টাকার গ্রহীতা, তিনি ব্যাংকের যেকোন শাখায় ব্যাংক ড্রাফট জমা করা মাত্রই, অর্থাত্, তিনি চাওয়া মাত্রই (অন ডিমান্ড/On Demand),
তাঁকে ওই ব্যাংক ড্রাফটের উল্লেখিত পরিমান টাকা নগদে বা তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রদান করা
হবে।
১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল (The Negotiable Instruments Act) আইনের
৮৫(ক) ধারা মতে, " কোন ব্যাংকের একটি শাখা, সেই ব্যাংকেরই ভিন্ন কোন শাখাকে চাওয়া মাত্র নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের যে আদেশ প্রদান করে,
তাকে ব্যাংক ড্রাফট বলা হয়।"
আরও পড়ুনঃগ্রামীণফোন কল লিস্ট দেখার নিয়ম
ব্যাংক ড্রাফট দেখতে কিছুটা ব্যাংক চেক এর মত দেখতে হলেও ব্যাংক চেক এর সাথে এর পার্থ্যক্য রয়েছে। চেক ইস্যু করার জন্য সংশ্লিষ্ট
ব্যাংকে একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক, কিন্তু ব্যাংক ড্রাফট ইস্যুর জন্য একাউন্ট বাধ্যতামূলক নয়।
আরও পড়ুনঃ
মস্তিষ্ক ভালো রাখার উপায়
এছাড়া ১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ৬ নং ধারা অনুযায়ি, ব্যাংক ড্রাফট কে চেক হিসেবে গণ্য করা যায় না । কারণ এটি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ব্যাংকের উপর
তৈরি করা হয় না। এতে চাহিবামাত্র টাকা প্রদানের নির্দেশ থাকে বলে একে "চাহিবামাত্র দেয় আজ্ঞাপত্রও (Demand Draft)" বলা হয়ে থাকে।
সাধারণত একটি ব্যাংক ড্রাফটে যেসব তথ্যের উল্লেখ থাকেঃ
১. ব্যাংকের নাম এবং যে শাখা থেকে ব্যাংক ড্রাফটে ইস্যু করা হয়েছে, সে শাখার নাম এবং কোড নম্বর।
১. ব্যাংকের নাম এবং যে শাখা থেকে ব্যাংক ড্রাফটে ইস্যু করা হয়েছে, সে শাখার নাম এবং কোড নম্বর।
২. ব্যাংক ড্রাফট ইস্যুর তারিখ।
৩. "পেইয়ি( Payee)" অর্থাত্ কাকে এই ব্যাংক ড্রাফটের টাকা প্রদান করা হবে।
৪. ব্যাংক ড্রাফটের টাকার অ্যামাউন্ট বা পরিমান , সংখ্যায় এবং বানান করে বা কথায় লেখা থাকবে।
৩. "পেইয়ি( Payee)" অর্থাত্ কাকে এই ব্যাংক ড্রাফটের টাকা প্রদান করা হবে।
৪. ব্যাংক ড্রাফটের টাকার অ্যামাউন্ট বা পরিমান , সংখ্যায় এবং বানান করে বা কথায় লেখা থাকবে।
৫. ব্যাংক ড্রাফটটি ব্যাংকের যে শাখায় পেমেন্ট করা হবে, সে শাখার নাম, জেলার নাম
এবং কোড নম্বর ।
৬. ব্যাংক ড্রাফট যার বরাবরে ইস্যু করা হয়েছে তার নাম, পদবি এবং ঠিকানা।
৭. নীচে লেখা থাকবে ব্যাংক ড্রাফটের নম্বর। ব্যাংক ড্রাফটের নাম্বার সাধারণত MICR কালিতে ছাপানো হয়ে থাকে।
৮. যে শাখা থেকে ব্যাংক ড্রাফট টি ইস্যু করা হয়েছে, সে শাখার ব্যাংক ড্রাফট ইস্যুকারি স্বীকৃত কর্মকর্তার( Authorized officer) স্বাক্ষর এবং সিল।
৯. কেউ যদি মনে করেন, ব্যাংক ড্রাফটের পেমেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হবে, সেটা ব্যাংক ড্রাফটের আবেদন করার সময় ফরমে উল্লেখ করে দিলে, ড্রাফটে অ্যাকাউন্ট পেয়ী (A/C Payee) স্ট্যাম্প মেরে দেয়া হয় বা ব্যাংক ড্রাফটের বাম কোনায় লিখে দেয়া হয়। এ ধরনের ব্যাংক ড্রাফটকে ক্রসড ব্যাংক ড্রাফট বলা হয়।
৬. ব্যাংক ড্রাফট যার বরাবরে ইস্যু করা হয়েছে তার নাম, পদবি এবং ঠিকানা।
৭. নীচে লেখা থাকবে ব্যাংক ড্রাফটের নম্বর। ব্যাংক ড্রাফটের নাম্বার সাধারণত MICR কালিতে ছাপানো হয়ে থাকে।
৮. যে শাখা থেকে ব্যাংক ড্রাফট টি ইস্যু করা হয়েছে, সে শাখার ব্যাংক ড্রাফট ইস্যুকারি স্বীকৃত কর্মকর্তার( Authorized officer) স্বাক্ষর এবং সিল।
৯. কেউ যদি মনে করেন, ব্যাংক ড্রাফটের পেমেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে হবে, সেটা ব্যাংক ড্রাফটের আবেদন করার সময় ফরমে উল্লেখ করে দিলে, ড্রাফটে অ্যাকাউন্ট পেয়ী (A/C Payee) স্ট্যাম্প মেরে দেয়া হয় বা ব্যাংক ড্রাফটের বাম কোনায় লিখে দেয়া হয়। এ ধরনের ব্যাংক ড্রাফটকে ক্রসড ব্যাংক ড্রাফট বলা হয়।
ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয়
একস্থান হতে অন্যস্থানে নিরাপদে কম খরচে যেকোনো অঙ্কের অর্থ স্থানান্তরের
জন্য ব্যাংক ড্রাফট ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ
ঋণের দলিল। এর সাহায্যে স্বল্প খরচে ও অল্প সময়ে একস্থান থেকে অন্য স্থানে
অর্থ প্রেরণ করা যায়।
ছবিঃ ব্যাংক ড্রাফট এর ফরম। |
- ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংক ড্রাফটের ফরম সংগ্রহ করতে হয়।
- এরপর ফরমের উপরের অংশে ডিমান্ড ড্রাফট বা ডিডি লিখা ঘরে টিক চিহ্ন দিতে হবে।
- আপনার নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার নির্দিষ্ট ঘরে লিখুন।
- যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে ব্যাংক ড্রাফট করছেন তার নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার দিন। প্রতিষ্ঠান এর ক্ষেত্রে সাধারণত মোবাইল নাম্বার থাকে না।
- ব্যাংক ড্রাফটের প্রাপক ব্যাংক এর শাখার নাম এবং জেলার নাম লিখুন।
- টাকার বিবরণি ঘরে টাকার পরিমান লিখুন। এর সাথে কমিশন বা ফি এবং ভ্যাট এর পরিমান লিখে মোট টাকার পরিমান লিখুন। ব্যাংক ড্রাফটের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাংকের আলাদা চার্জ বা কমিশন আছে, যা শতকরা হিসেবে নির্ধারিত হয়। ব্যাংক ড্রাফটের কমিশন বা ফি এবং ভ্যাট এর পরিমান জানা না থাকলে তা ব্যাংকের দায়িত্বরত কর্মকর্তার নিকট থাকে জেনে নিন।
- সবকিছু পূরণ করার পরে ব্যাংক ড্রাফট ফরমটি একবার মিলিয়ে যাচাই করে নিন। সবকিছু ঠিক থাকলে ফরমটি ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে টাকাসহ জমা দিন। তারপরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে সেই ক্যাশ কাউন্টার থেকে বা নির্ধারিত কাউন্টার থেকে আপনাকে ব্যাংক ড্রাফট যা দেখতে কিছুটা চেকের মত, তা দেওয়া হবে।
শেষ কথাঃ ব্যাংক ড্রাফট কি । ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয়
আজকের আর্টিকেলে ব্যাংক ড্রাফট কি এবং ব্যাংক ড্রাফট কিভাবে করতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা
করি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক কাজে আসবে। আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে লাগলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে। এরকম আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে জানতে
আমাদের সাথেই থাকুন। আর আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে শেয়ার করুন আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মতামত জানান কমেন্ট সেকশনে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url