মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়

অনেক ভাইরা আছে জানতে চাই মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু বিবাহ এবং তালাক ইসলামী সম্পূর্ণ জায়েজ একটি বিষয় তাই মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানা উচিত। আপনাদের জানার সুবিধার্থে মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? কিনা? বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়

মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়

আমরা অনেকেই মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? এই প্রশ্নটি করে থাকি। কারণ রাগের মাথায় শয়তানের ধোকাতে পড়ে আমরা অনেক সময় আমাদের নিজেদের স্ত্রীকে মনে মনে তালাক দিয়ে থাকি। যেহেতু তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের জীবনের সাথে জড়িত একটি বিষয় তাই অবশ্যই মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়

মনে মনে তালাক দিলে তালাক হয় না। তালাক কখনো মনে মনে দেওয়ার বিষয় নয়। আমরা মনে মনে যেটা বলি সাধারণত সেটা হলো কল্পনা যার কোন অস্তিত্ব নেই। যদি কেউ খারাপ পরিকল্পনা করে তাহলে তার গুনা হবে এবং এটি নিষিদ্ধ। এছাড়া যে কাজের গুনহা নেই সেটা নিয়ে যদি পরিকল্পনা করা হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই।

বিয়ে তালাক এইসব আমাদের জীবনের সাথে জড়িত খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেগুলো কখনো মনে মনে করা যায় না। এগুলো অবশ্যই সবাইকে জানিয়ে এবং সাক্ষী রেখে করতে হয়। আপনি যদি কোন কাজের মাধ্যমে অথবা কথার মাধ্যমে স্পষ্ট আকারে বলেন তাহলে তালাক হবে কিন্তু মনে মনে তালাক দিলে কখনো তালাক হবে না। তালাক দেওয়ার জন্য লেখা বা মুখে উচ্চারণ করা জরুরী।

না জেনে তালাক দিলে কি হয়

না জেনে তালাক দিলে কি হয় এ ধরনের প্রশ্ন শোনা যায়। আমরা অনেক সময় না জেনে বিভিন্ন রকমের কাজ করে থাকি। যদিও ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে তালাক সম্পন্ন জায়েজ কিন্তু জায়েজ কাজগুলোর মধ্যে সবথেকে ঘৃণিত কাজ হল স্ত্রীকে তালাক দেওয়া। না জেনে তালাক দিলে কি হয়? বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।

স্ত্রীর মাসিক অবস্থায় তালাক দিলে স্বামীর গুনাগার হবে এবং সে তালাক গণ্য হবে না। পবিত্রতায় তালাক দিলে তবেই সে তারা গণ্য হবে। স্ত্রীর মাসিকের খবর না জেনে তালাক দিলে গুনাগার হবে না কিন্তু তালাক হবে না। যেহেতু তালাক অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তাই রাগের মাথায় না জেনে এ কাজ থেকে বিরত থাকা আমাদের উচিত।

২ তালাক দিলে কি হয়

যদি কোন স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয় অথবা তালাক হয় তাহলে শয়তান সব থেকে বেশি খুশি হয়। কারণ স্বামী স্ত্রীর তালাকের পিছনে শয়তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেজন্য আমাদেরকে মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? ২ তালাক দিলে কি হয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে। ২ তালাক দিলে কি হয়? নিচে উল্লেখ করা হলো।

দুই তালাক বা এক তালাক দেয়ার পর স্বামীর অধিকার থাকে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন মাসিক অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই।কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ নয়।

এ হিসেবে স্বামী যদি চায়, স্ত্রীর ইদ্দত তথা ৩ হায়েয অতিক্রান্ত হওয়ার আগে, স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে, তাহলে সে পারবে কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। ইদ্দত শেষ হওয়ার পর যদি স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে চায়, তাহলে তাকে নতুন করে মোহর দিয়ে বিবাহ করে আনতে হবে।

চলে যাও বললে কি তালাক হয়

অনেক সময় স্বামী তার স্ত্রীকে চলে যাও বলে থাকে। যদি সে তার সাথে সংসার করতে না চায় সাধারণত তখন এই কথাটি বলে থাকে। অনেকেই রাগের মাথায় বলে থাকে আবার অনেকেই নিজস্ব জ্ঞানে বলে থাকে। তারপরে চলে যাও বললে কি তালাক হয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চায়। চলে যাও বললে কি তালাক হয়? ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ বাংলালিংক মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজ

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর তালাকের নিয়তসহ এরূপ ইঙ্গিতবহ বাক্য উল্লেখ করে তালাক প্রদান করাকে "কেনায়া তালাক" বলে। (মাজমূ ফাতাওয়া ৩২-৩০২)

আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট একটি ঘরে পাঠানো হল আর তিনি তার নিকটবর্তী হলেন, তখন সে বলল, 'আমি আপনার থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।' রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, 'তুমি তো এক মহামহিমের কাছে পানাহ চেয়েছ। তুমি তোমার পরিবারের কাছে গিয়ে মিলিত হও।' (বুখারীঃ ৫২৫৪, ইবনু মাজাহঃ ২০৫০)

সংগ্রহঃ at-tahreek.com

ডিভোর্স দিলে কি তালাক হয়

অনেকে প্রশ্ন করে থাকে ডিভোর্স দিলে কি তালাক হয়? আপনি যদি চান তাহলে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী মুখে বলে তালাক দিতে পারবেন অথবা আইন-কানুন এর আশ্রয় নিয়ে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিতে পারবেন। তালাক এবং ডিভোর্স দুইটি ভিন্ন শব্দ হলেও এর অর্থ কিন্তু একই। আপনি যদি ডিভোর্স দিয়ে থাকেন তাহলে তালাক হয়ে যাবে। চলুন জেনে নেই ডিভোর্স দিলে কি তালাক হয় কিনা?

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে তালাক দেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র স্বামীকে দেওয়া হয়েছে। যে কোন কারণ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে। তালাক দেওয়ার অধিকার স্ত্রীকে দেওয়া হয়নি এর কারণ রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী চাইলে তার স্বামীর কাছ থেকে তালাক নিয়ে নিতে পারবে। যদি কাবিন নামায় স্বামী তার স্ত্রীকে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দিয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে।

স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়?

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে স্বামীকে তালাকের সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে কিন্তু স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়া হয়নি। আপনারা যারা স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়? এই প্রশ্ন করেছেন আপনারা জেনে নিন যে স্ত্রীর তালাক দিলে কখনোই তালাক হয় না।

বাংলাদেশের ইসলামি আইনে একজন নারীকে বিয়ে করে ঘরে তুলতে হলে অবশ্যই দেনমোহর দিতে হবে। শুধুমাত্র স্ত্রী যদি চান তাহলে অনেক ক্ষেত্রে স্বামীর দেনমোহরের টাকা চাইলে মাফ করে দিতে পারেন। তবে দেনমোহর আবশ্যক। 

আমাদের দেশে কাবিনে স্ত্রীর তালাকের বিধান ছিল না। এখন করা হয়েছে। তবে একজন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে তালাক দিতে চায় তবে অবশ্যই কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে তালাক উল্লেখ থাকতে হবে। স্ত্রীর যদি তালাকের অধিকার না থাকে তবে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে তালাকের ডিক্রি নিতে হয়। তবে এ ধরনের তালাক পদ্ধতি একটু জটিল বটে।

তালাকে এমন একটি পদ্ধতি যার দুজনের সম্মতিতে হয়ে থাকে। কিন্তু স্বামী যদি যায় তাহলে একা স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে। যদি বিনা কোন কারণে তালাক দেয়া হয় তাহলে এটি জঘন্যতম কাজ হবে। আর যদি তালাকের পিছনে বড় কারণ থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে তারা আলাদা হয়ে যেতে পারবে।

স্ত্রী তালাক দিতে চাইলে কী করবেন? এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে। স্ত্রী যদি তালাকের সিদ্ধান্তে অটল থাকে তবে জটিলতা না বাড়ানো ভালো। মনে রাখবেন তালাক স্বামী স্ত্রী উভয়ের অধিকার। আশা করি স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়? এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গিয়েছেন।

তালাক হয়েছে এরূপ সন্দেহে কি তালাক হয়

তালাক হয়েছে এরূপ সন্দেহে কি তালাক হয়? এ ধরনের প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে। কারন আমরা অনেক সময় মনে হয় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি একটা সন্দেহের মধ্যে থাকি। সেক্ষেত্রে তালাক হয়েছে এরূপ সন্দেহে কি তালাক হয়? এই প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরী। স্ত্রী যখন হায়েজ অর্থাৎ মাসিক থেকে পবিত্র হবে তখন স্বামী তার সঙ্গে সহবাস না করে সুস্পষ্ট শব্দ তালাক দেবে। মাসিক অবস্থায় তালাক দেওয়া নিষিদ্ধ।

স্বামী সুস্পষ্ট শব্দ এক তালাক দেবে। এরপরে স্বামী যদি স্ত্রীকে ইদ্দত চলা অবস্থায় ফিরিয়ে নেই তাহলে ভালো। পুনরায় স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক কায়েম হয়ে যাবে। এর জন্য নতুন করে বিবাহ করার প্রয়োজন নেই। আর যদি ইদ্দত চলাকালীন অবস্থায় স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেই তাহলে ইদ্দত শেষে সঙ্গে সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

আরো পড়ুনঃ প্রস্রাবে এলবুমিন কমানোর উপায়

স্বামী-স্ত্রী চাই যে আর কোনদিন তারা একে অন্যের সংসারে ফিরে আসবে না সে ক্ষেত্রে ইসলাম একসঙ্গে তিন তালাক দিতে নিষেধ করেছে। তাই মাসিকের পর প্রত্যেক পবিত্রতা সময় এক তালাক করে তিন তালাক দেবে। এভাবে তিন তালাকের মধ্যে তারা সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে। এই পদ্ধতিতে তালাক দিলে তালাক পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবে চিন্তাভাবনা করার সুযোগ পাওয়া যায়।

আমাদের শেষ কথাঃ মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে, মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? তালাক হয়েছে এরূপ সন্দেহে কি তালাক হয়? স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়? ডিভোর্স দিলে কি তালাক হয়? চলে যাও বললে কি তালাক হয়? ২ তালাক দিলে কি হয়? না জেনে তালাক দিলে কি হয়? এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়? বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জেনে নিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪